আমার বাবার কথা কাউকে বলা হয় নি কোনদিন,কেউ জানতেও চায়নি,আর বলার সুযোগ হয়নি। তাই সব চিলেকোঠার ঘরে মনের ভিতর রেখে দিতাম। তিনি ছিলেন একাধারে বিজ্ঞানী, লেখক, চিত্রকার,শিক্ষক।৮০ র দশকে বাংলায় প্রথম বৌজ্ঞানিক বিষরের আধারিত পত্রিকা ,নাম ছিল “বিজ্ঞানী” প্রকাশিত হয়,ত্রইমাসিক পত্রিকা, তিনি ছিলেন তার editor,
বাংলার গ্রামগঞ্জের স্কুলে স্কুলে বিতরন হত। সমসাময়িক বিজ্ঞানের জ্ঞান পৌছে দেওয়া ছাত্র আর শিক্ষকদের কাছে, প্রায় ১৫ বছর এই পত্রিকা প্রকাশিত হত।
Birla Museum এ ছাত্রদের বিজ্ঞান মেলা আয়োজনের ভার ছিল তার,দূর দিগন্ত মেঘালয়,ইম্ফল ত্রিপুরা থেকে আসত ছাত্র ছাত্রিরা। এখনো মনে পরে বাবার সেই আয়োজন করার উতসাহ।
প্রতিমাসে বাবাকে দেখেছি বিজ্ঞানের মোবাইল একজিভিষন ভ্যান নিয়ে মুরশিদাবাদ,বিরভুম,বাকুড়া শিলিগুড়ি নিয়ে যেতে।
শুনতাম কত স্কুল পরিদর্শনের কথা।
বাবার কাছে গল্প শুনতাম সেযুগের সমস্ত বিজ্ঞানীদের ছোটবেলার কথা। আর শুনতাম সাধারণ ভাষায় বিজ্ঞানের অবদান।
ছুটির দিনে কখনো খালি হাতে বসতে দেখিনি, কখনো কাঠের চেয়ার টেবিল তৌঁরী হচ্ছে,কখনো বা নুতন গ্রামোফোন হাতে বানানো।
বাবা ইলেকট্রনিকস এ খুব জ্ঞান ছিল, অনায়াসে রেডিও টিভি সারাতে পারতেন। মনে আছে বাড়িতে সবসময় দু চারটে রেডিও টিভি তো থাকতো।
মনে পড়ে কত দিন নুতন antenna design করে ঢাকা দেখার প্রচেষ্টা।
বাবা খুব ভাল আকতে পারতেন,sketch বিশেষত।খবরের কাগজের কোনায়,খাতায় ছোট ছোট ছবি,অনেকটা কারটুনের মত,কিন্তু চোখের সামনের বস্তু,যেমন ঘোড়ার গাড়ি,বাড়ি,লন্ঠন।
নারকোলের খোল দিয়ে মুরতি গড়া retirement এর পড়ে এক অভুতপুরব অনুভব। তিনি নিজে তার সমস্ত সরঞ্জাম তৌরী করেছিলেন।
আমাকে নিয়ে তার অনেক আশা ছিল।
আমি কেমন জানি হয়ে গেলাম হঠাৎ করে একা।
জানিয়ে একটু হাল্কা হলাম।